বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মিত হয়েছে ‘গন্তব্য’ সিনেমা। এটি নির্মাণ করেছেন অরণ্য পলাশ। বিভিন্ন ইস্যুতে একাধিকবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল সিনেমাটি। বিভিন্ন কারণে প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল এর মুক্তি। তবে এবার জানা গেল, মুক্তি পাচ্ছে ‘গন্তব্য’। ১৯ মার্চ সারাদেশে মুক্তি পাওয়া কথা রয়েছে এটির। এমনটাই জানিয়েছেন সিনেমাটির প্রযোজক আনোয়ার আজাদ। তিনি বলেন, ১৭ মার্চ ওয়ার্ল্ড টেলিভিশন প্রিমিয়ার হবে ‘গন্তব্য’ সিনেমাটির। তারপর ১৯ মার্চ হলে মুক্তি পাবে। ২৬ মার্চ দেশের কয়েকটি টেলিভিশনে সিনেমাটি প্রচারের পরিকল্পনা আছে। তারপর সাব-টাইটেল যুক্ত করে ফেস্টিভ্যাল এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তির পরিকল্পনা রয়েছে।
সুইট চিলি ফিল্মসের ব্যানারে নির্মিত হয়েছিল সিনেমাটি। তারপর এটির মালিকানা স্বত্ব কিনে নিয়েছে কানাডা ও বাংলাদেশভিত্তিক প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘আনোয়ার আজাদ ফিল্মস’। যার কর্ণধার আনোয়ার আজাদ।
সিনেমাটি সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পেয়েছিল অনেক আগেই। ‘গন্তব্য’ সিনেমার বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফেরদৌস, আইরিন, এলিনা শাম্মী, আমান রেজা, আফফান মিতুল, মাসুম আজিজ, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, কাজী রাজু, কাজী শিলা প্রমুখ।
কাহিনী সংক্ষেপে
শহরের ইউনিভার্সিটি পডুয়া পাঁচ বন্ধু, ওদের মধ্যে তিন জন ছেলে ও দুজন মেয়ে যাদের নাম হীরা, রুহি, রুনা আবির, তমাল তাদের একত্র ভাবনা দেশের মঙ্গল। দেশের মানুষের মনে যেন একটি বিশ্বাস থাকে, সেটি হলো অন্যের ঘাড়ে দায়িত্ব চাপিয়ে না দিয়ে নিজেরাই যেনো দেশের স্বার্থে নিজ নিজ দায়িত্ব নিয়ে নেই। নিজের দেশকে “আমার দেশ” বলতে পারলেই এ দেশের প্রকৃত উন্নতি হবে, নিজের দেশকে ভালবাসা যাবে। পাঁচ বন্ধু এই বিশ্বাস থেকেই নিজস্ব উদ্দ্যোগে একটি স্বল্পদৈষ্য দেশভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণ করল। তাদের উদ্দেশ্য, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে দেশের প্রত্যšত এলাকায় এই চলচ্চিত্রটি প্রদর্শন করা। বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, জেলা শহর, থানা সহ সারা দেশে দেশভিত্তিক চলচ্চিত্রটি তারা প্রদর্শন করার জন্য ব্যপক প্রস্তুতি নিল। মূলউদ্দেশ্য একটাই সবাই যেন “আমার দেশ” বলে আর দেশের মঙ্গলে এগিয়ে আসে, দেশের সঠিক ইতিহাস জানতে পারে ও বিভিন্ন অরাজকতা থেকে দেশ মুক্ত হয়। তারা প্রথমেই চলচ্চিত্রটি প্রদর্শন করার জন্য শহরের ইংরেজী মাধ্যমে স্কুল গুলোকে নির্ধারন করল। একটি স্কুলে এসে পিন্সিপাল অনুমতি নিয়ে দিন নির্ধারণ করা হল। চলচ্চিত্রটি প্রদর্শন শুরু হল। একেক দিন একেক ক্লাসের বাচ্চারা আসছে হলরুমে। প্রচন্ড আগ্রহ আর উদ্ধিপনা নিয়ে চলচ্চিত্রটি উপভোগ করছে সবাই।
আয়া-বুয়ারাও কাজ ফাঁকি দিয়ে চলচ্চিত্রটি দেখছে। কিন্তু অবিভাবক যারা রয়েছেন, তারা ভাবছেন যে, তাদের শিশুর লেখাপড়া ক্ষতি করে কিসের চলচ্চিত্র প্রদর্শন। তারা মৃদু প্রতিবাদ করল। কিন্তু শিশু ও স্কুল কর্তৃপক্ষের আগ্রহের মুখে তাদের প্রতিবাদ আর টিকলোনা। এবাবে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর একটি প্রতিবন্ধী শিশু । “আমার দেশ” অনুভূতি জাগ্রত হয় তার মনে। হঠাৎ সে একটি প্যাকার্ড লিখে নিজের বকে ঝুলিয়ে দাড়ালো রা¯তায়। তাকে দেখে পথচারিরাও উদ্ভুদ হল। উদ্ভুদ হল এদেশের বসবাসকারী ভীনদেশিরাও। এই পরিস্থিতি পাঁচ বন্ধু আরও উদ্দোগী হল সারাদেশে চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর ব্যাপারে। ওরা পাঁচজন সব বাধা অতিক্রম করে তাদের কার্যক্রম বহাল রাখল। এবারে প্রশ্ন চলচ্চিত্রটি কি? চলচ্চিত্রটি চর এলাকার জেলে জনগোষ্ঠী নিয়ে নির্মিত। অত্যাšত দরিদ্র তারা, মাছ শিকার ও বিক্রয় তাদের পেশা। নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করতে তারা অমানবিক পরিশ্রম করে, পারিবারিক টানাপোড়নে ও জীবিকার কসাগাতে জর্জরিত তারা। তবুও তাদের মধ্যে কিছু মানবিক শুনাবলী রয়েছে, প্রেম, ভালোলাগা-ভালবাসা তাদের জীবনকে মাঝে মাঝে রঙ্গীন করে। ঐ গ্রামে একজন বিচক্ষন মুরব্বী আছে,যার নাম ”বিরেন”। আছে তিন জোড়া যুবক যুবতী। এই তিন জোড়া যুবক যুবতির মধ্যে কারও প্রেমের সম্পর্ক, বিরেন ওঝার একটি পালক মেয়ে আছে নাম তার পুস্প। এদেরকে গিরেই এই চলচ্চিত্রের কাহিনী। ওঝা এই এলাকার মানুষের এত দারিদ্রতা আর দুঃখ কষ্ট দেখে প্রামবাসীকে বলল, এই গ্রামের মাটিরনীচে গুপ্তধন আছে। যে গুপ্তধন খুঁজে পেলে গ্রামবাসীর আর কোন দুঃখ কষ্ঠ থাকবে না, থাকবে না কোন অভাব। তারা প্রকৃত মানুষ হতে পারেেব, নিজেদের মধ্যে আর কোন হানাহানি, মারামারি, কলহ বিবাদে জড়াবে না। এই কথার বলার পর গ্রামবাসী অত্যাšত আগ্রহ নিয়ে মাটি খনন করতে থাকে সবাই গুপ্তধন পাবার আশায়। এই মাটি খননকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ঘটনার অবতারনা হয়। প্রচন্ড উদ্বেগ, উৎকন্ঠা। কি আছে সেই গুপ্তধনের বাক্সে। এই বাক্সকে কেন্দ্র করে নিজেদের মধ্যে দু-তিন দলে বিভক্ত হতে থাকে নিজেদের অজান্তে এক সময় মাটি খনন করে মাথার খুলি আর কয়েকটা হাড় পাওয়া যায়। তাই নিয়ে আবার বিরোধ শুরু হয়। ওঝা সকলকে নিয়ে বুঝাতে শুরু করে এই জায়গায় সেই গুপ্তধন বাক্সটি আছে। পুনরায় আবার খনন কার্যে সবাই লিপ্ত হয় পাওয়া না পাওয়ার দু টানায়। এই দিকে যখন সেই বাক্স খোঁজার উত্তেজনায় বিবড় অন্যদিকে ৬ষ্ঠ শ্রেনীর প্রতিবন্ধি শিশুটি আর পাঁচ বন্ধু তাদের কর্মকান্ডে সারা শহরে, জেলায় জেলায় উত্তেজনার জড় তোলে ফেলেছে। সাধারন লোকরাও শামিল হচ্ছে একই পতাকা তলে। জাগ্রত হচ্ছে সাধারন মানুষ, সবার একটাই কথা “আমার দেশ”।
অবশেষে সেই অপেক্ষকৃত বাক্সটি পাওয়া গেল, কিন্তু সম্পদের লোভে নিজেদের ভেতর আবার হানাহানি। কেউ কাউকে মানতে পারছে না, কে ভাঙ্গবে এই বাক্স আর কে বন্টন করবে এই সম্পদ। বিরেন ওঝা এই পরিস্থিতি দেখে নিজেই চলে যাওয়ার কথা বলতেই, “কাহা কই যাও? যামু কৈবল্যে,আর আমি যাওয়ার পর যেই ঘটনাখানা ঘটবো এই লেইগা তোমরা আমারে ক্ষ্যামা কইরা দিও, আর পুস্পরে রাইখা গেলাম………..।
ওঝা চলে যাই, শুরু হয় বাক্স ভাঙ্গা, কিন্তু যা বলে গেল তাই, আবার মারামারি অবশেষে কয়েকজনের মৃত্যু। বাক্সটি খোলা হলো তাতে কোন টাকা পয়সা বা কোন ধরনের সম্পদ নেই পাওয়া গেল তালপাতার কিছু লেখা চিঠি, যাতে লেখা আছে ১৯৪৭ সাল অর্থাৎ দেখানো হবে ১৯৪৭ সালের ইতিহাস সম্বলিত তথ্যচিত্র,(সমসাময়িক শহরের আšেদালন সাথে লিংকআপ করে সাজানো হবে) রয়েছে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯,১৯৭১,১৯৯০ এবং চলমান বাংলাদেশের অবস্থা। সেই সাথে সাথে পুস্প বলতে থাকে” এই সেই জিনিস, আসল জিনিস, আমগো সব। সব লিখা আছে এতে নিজেগো জানার কথা নিজেগো বোঝার কথা যা আমাগো আসল মানুষে পরিনত করবো।
অন্যদিকে ওরা পাঁচজন আর ৬ষ্ঠ বছরের শিশুটি দেশবাসীকে সংগঠিত করেছে দেশবোধের চেতনায়। সমগ্র দেশের মানুষ দেশটাকে নিজের দেশ ধারন করে প্রত্যেকেই যেন “আমার দেশ”বলছে। সমগ্র দেশের মানুষ ছুটে আসছে একই পতাকা তলে সামিল হবার উদ্দেশ্যে। বিশাল জনসমুদ্র, নেতৃত্ব দিচ্ছে ৬ষ্ঠ শ্রেনীর সেই প্রতিবন্ধী ছেলেটি, সাথে পাঁচ বন্ধু পেছনে দেশবাসী। টপ শর্টে দেখা যাবে লাল সবুজের পতাকা “আমার দেশ”। আমরা দেখবো সবাই আবার জাতীয় সঙীত গাচ্ছে, তবে সম্মাণ করে।
কুশীলব
জেলে পাড়া
বিরেন ওঝা জয়ন্ত্র চট্রোপ্রাধ্যায়
কার্তিক ফেরদৌস আহম্মেদ
কার্তিকের বউ কৃষনা আইরিন
কার্তিকের বাবা হরেন মাসুম আজিজ
কার্তিতের মা লাবণ্য কাজী শিলা
নগেন কাজী রাজু
বিরেনের মেয়ে পুস্পা এলিনা শাম্মী
সিধু মোহাম্মদ হিমু
সিধুর বউ বিজলি মেমি
নন্দা আফফান মিতুল
নিখিল মজনু
কমলেশ সাগর